Thursday, August 28, 2025
HomeScrollকোথা থেকে আসেন নাগা সন্ন্যাসীরা, কোথায় অদৃশ্য হয়ে যান?

কোথা থেকে আসেন নাগা সন্ন্যাসীরা, কোথায় অদৃশ্য হয়ে যান?

ওয়েব ডেস্ক: প্রতি ১২ বছর অন্তর আসে কুম্ভস্নান। উত্তরপ্রদেশে প্রয়াগরাজে শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ (Mahakumbh 2025) মেলা। এবার হচ্ছে বিরল মহাকুম্ভ। ১৪৪ বছরে প্রথমবার এই পূণ্য তিথি এসেছে। কুম্ভে পূণ্য স্নান করতে প্রয়াগরাজে দেশ-বিদেশ থেকে ভিড় জমিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হল মহাকুম্ভ মেলা। নাগা সাধুরা (Naga Sadhus) কুম্ভের সময় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু থাকে। এই কুম্ভে আসেন নাগা সন্ন্যাসীরাও। এদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে কৌতুহলের শেষ নেই। এই যেমন কোথায় থাকেন তাঁরা, কোথা থেকেই আসেন। আবার কোথায় অদৃশ্য হয়ে যান তাঁরা। সহজে কেন বা তাঁদের দেখা মেলেনা। কবে থেকে শুরু হয়েছে এই প্রথা?

ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যায়, বহু শতাব্দী ধরেই নাগা সন্ন্যাসীদের অস্তিত্ব ছিল। তাদের আরাধ্য দেবতা শিব। ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট’ ভারতে এসেছিলেন, তখন তিনি বিভিন্ন ধর্মের সমাগম দেখেছিলেন। এদের মধ্যে অন্যতম ছিল নাগা সাধুরা। নাগা শব্দটি এসেছে সংস্কৃত থেকে, যার অর্থ পাহাড়। অর্থাৎ যারা পাহাড়ে থাকতেন, তাদেরই পাহাড়ি বা নাগা বলা হত। ব্রহ্মচর্য গ্রহণ গ্রহণ করে গার্হস্থ্য জীবনে ফিরেরেন। তারাই নাগা সন্ন্যাসী হন। তবে সাধারণ সাধুদের থেকে নাগা সন্ন্যাসীরা অনেকটাই আলাদা। প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেলে নাগা সন্ন্যাসী হতে পারেন না। নাগা সন্ন্যাসী হতে গেলে ছোটবেলাতেই সন্ন্যাস গ্রহণ করতে হয়। নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার যাত্রা শুরু হয় ব্রহ্মচর্য থেকে। এই প্রথম স্তরই অত্যন্ত কঠিন হয়। ছোটবেলায় সন্ন্যাসী হওয়ার জন্য তারা আখড়ায় যোগ দেন। পরীক্ষা দিতে হয় তাদের মনের জোর, দৃঢ় প্রতীজ্ঞা ও একাত্ববোধের। পূর্ববর্তী জীবন সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করতে হয়। সামাজিক, পারিবারিক বন্ধন ত্যাগ করে পিণ্ডদানের মাধ্যমে নবজন্ম হয় তাদের। শেষ ধাপ হয় লিঙ্গ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। এই সময়ে সন্ন্যাসীদের ২৪ ঘণ্টা উপবাস করতে হয়। একটা দিন তারা আখড়ার পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে থাকেন। এই রীতির মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক শুদ্ধতা হয়। এই ধাপ উত্তীর্ণ হওয়ার পরই একজন নাগা সন্ন্যাসী হতে পারেন।

আরও পড়ুন: মহাকুম্ভের শুরু নেপথ্যে পৌরাণিক কাহিনি জানেন?

বারাণসীতে মহাপরিনির্বাণ আখড়া এবং পঞ্চ দশনাম জুনা আখড়া কুম্ভের দুটি নাগা আখড়া। অধিকাংশ নাগা সাধু এখান থেকেই আসেন। কুম্ভের সময়ে নাগা সাধুরা বিভিন্ন আখড়ায় অমৃত স্নান করেন। এখানে মহিলা নাগা সন্ন্যাসীরা গেরুয়া পোশাক পরে থাকেন। নাগা সাধ্বীরা কখনওই জনসমক্ষে নগ্ন থাকেন না। নাগা সাধুরা লম্বা চুল রাখেন, নাগা সাধ্বীরা কিন্তু তাঁদের চুল কামিয়ে রাখেন। সম্পূর্ণ ব্রহ্মচর্য অনুসরণ করেন।

নাগা সন্ন্যাসীরা কোনও পোশাক পরেন না। কারণ তাঁদের শরীর থেকে মন শুদ্ধ রাখেন। সেই কারণে তারা পোশাক পরেন না। ঠান্ডা না লাগার অন্যতম কারণ হল তারা বিভূতি লাগান। মৃতদেহের ছাই বা বিভূতি মন্ত্রপূত, তা নাগা সন্ন্যাসীদের শীত থেকে সুরক্ষা দেয়। মূলত শীতল স্থানে থাকেন তারা। নাগা সাধুরা প্রায়ই একটি ত্রিশূল বহন করেন। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের মতো পাহাড়ি নির্জন এলাকায় থাকেন। সেখানে পাহাড়ি গুহায় বাস করেন। তারাই প্রথম কুম্ভমেলায় স্নান করার অধিকারী। এর পরই বাকি ভক্তরা স্নান করার সুযোগ পান। মেলা শেষে সবাই ফিরে যান নিজেদের রহস্যময় জগতে।

অন্য খবর দেখুন 

YouTube player
Read More

Latest News